অসংখ্য প্রবাদ আছে যা সাহিত্যের মর্যাদা পেয়ে থাকে।
ইংরেজি ভাষাতেও আছে, তবে অন্যান্য ভাষায় আছে কি না তা এই প্রতিবেদককের জানা নেই।
▪️অকারণে কিছু ঘটনা। (No smoke without fire.)
▪️

1. হওয়া ভাতে কাঠি:
কাজ শেষ হয়ে গেলে তাতে সাহায্য করতে আসা।
2. হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলা: সৌভাগ্যে পাওয়া সুযোগ বুদ্ধিদোষে নষ্ট করা।
3. হংসমধ্যে বকো যথা:
সুন্দরের মধ্যে অসুন্দরের উপস্থিতি; গুণীজনের মাঝে মূর্খের বিসদৃশ উপস্থিতি।
4. হক কথায় আহাম্মক রুষ্ট:
উচিত/সত্য কথা বললে নির্বোধ ব্যক্তিরা রাগ করে এবং বুদ্ধিমান সন্তুষ্ট হয়।
5. হাতে মারি না ভাতে মারি:
হাতে মারার চেয়ে ভাতে মারা অনেক নিষ্ঠুরতার কাজ।
6. হাতে দই পাতে দই তবু বলে কই কই:
নিমন্ত্রণবাড়ীতে ভূরিভোজ করেও আশ মেটে না; যেন কোনদিন কিছু খায় নি।
প্রাচুর্য সত্বেও অভাববোধ যায় না।
7. হক কথায় দেবতা তুষ্ট, উচিৎ কথায় মানুষ রুষ্ট:
দেবতুল্যলোক উচিৎ কথা শুনে সন্তুষ্ট হন, কিন্তু সাধারণ মানুষেরা উচিৎ কথা শুনে ক্ষেপে যায়।
8. হক কথায় বন্ধু বিগড়ায় / হক কথায় মামা বেজার:
সত্যকথা কেউ শুনতে নারাজ; সত্যকথা বললে আপনজনও অপছন্দ করে; সুতরাং মা ব্রুয়াৎ সত্যমপ্রিয়ম।
9. হক কথার ভাত নেই:
উচিত/সত্য কথা দাম পায় না।
10. হাতে কালি মুখে কালি বাছা আমার লিখে এলি:
ছেলে লিখুক বা না লিখুক হাতে মুখে কালি থাকলে মায়েরা ভাবে ছেলে তার লিখেপড়ে এসেছে।
11. হাতির পাঁচ পা দেখা:
অহঙ্কারী ব্যক্তির দাম্ভিক আচরণ।
12. হক কথার মার নেই:
সত্য কথা বলায় বিঘ্ন নেই।
13. হাতি মরলেও লাখ টাকা:
মহার্ঘ বস্তু সবসময় মহার্ঘ থাকে।
14. হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল:
বিজ্ঞরা যেখানে ব্যর্থ সেখানে নির্বোধ এসে নাক গলায়; সবল যে কাজ করতে ব্যর্থ, দুর্বল সেই কাজ করতে এগিয়ে যায়।
15. হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী:
যেমন হাঁদারাম রাজা তেমনি গাধারাম মন্ত্রণাদাতা;
অকর্মণ্য ব্যক্তির ততোধিক অযোগ্য দোসর;
নির্বোধ লোকের নির্বোধ পরামর্শদাতা।
মূল প্রবাদটি হল ভবচন্দ্র রাজার গবচন্দ্র মন্ত্রী; (উৎসকাহিনী- ভবচন্দ্র ছিলেন কামরূপের রাজা গোবিন্দচন্দ্রের পুত্র; তাঁর আসল নাম ছিল উদয়চন্দ্র; ডাকনাম ছিল ভবচদ্র; তিনি ছিলেন অচতুর; তাঁর মন্ত্রীও ছিলেন তেমনি নির্বোধ; সেইজন্য ভব, হব বা হবু হয়েছেন (হাবারাম অর্থে) এবং মন্ত্রী গব বা গবু হয়েছেন (গবারাম অর্থে)।
16. হবু ছেলের অন্নপ্রাশন:
আগাম সুখকল্পনা; পরে কি হবে না জেনে আগে থেকেই প্রস্তুতি;
সমতুল্য- 'কালনেমির লঙ্কাভাগ'; 'রাবনের ছাদনাতলা'; রাম না হতেই রামায়ণ' ইত্যাদি।
17. হাড়ে দূর্বা গজানো:
জমি পড়ে থাকলে দূর্বা গজায়, - অত্যন্ত অলস; আলসেমি এমনমাত্রার যে দূর্বাও সেখানে গজানোর সুযোগ পায়।
18. হাড় এক ঠাঁই মাস এক ঠাঁই:
প্রচণ্ড প্রহারে ক্ষতবিক্ষত।
19. হ-য-ব-র-ল:
কাজে বিশৃঙ্খলা; গোলমেলে ব্যাপার
20. হয় না-হয় বিয়ে, ঢাক বাজাও গিয়ে:
বিয়ে হবে কিনা ঠিক নেই তারজন্য আগাম ব্যস্ততা; আদিখ্যেতা, বাড়াবাড়ি। সমতুল্য- 'হবু ছেলের অন্নপ্রাশন'।
21. হয় যদি তিলটা, কয় তবে তালটা:
(বা ‘তিলকে তাল করা’)ঘটনার বর্ণনায় বাড়াবাড়ি।
22. হাটকানা:
হাটে নানারকম জিনিসপত্র দেখে যার তাক লেগে যায়, কোনটা কিনবে ঠিক করতে পারে না।
23. হরি বড় দয়াময়, কথায় বটে কাজে নয়:
অবিশ্বাসীর দেব-দ্বিজে অভক্তি; বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রতিফলন; কোন ব্যক্তিকে লোকে দয়ালু বলে জানে অথচ অভিজ্ঞতা অন্য কথা বলে।
24. হরি বাঁচান প্রাণ, বৈদ্যের বাড়ে মান:
একজন কাজ করে; অন্যজন তার সুখ্যাতি কুড়ায়; কাকতলীয়ভাবে কেউ কোন কাজের কৃতিত্ব পেলে এই প্রবাদ বলা হয়; সমতুল্য- 'ঝড়ে কাক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে'।
25. হাঁড়ির ভাত একটা টিপলেই সবার খবর মেলে:
দলের একজনকে চিনলেই সবাইকে চেনা যায়।
26. হরি ঘোষের গোয়াল:
নিস্কর্মা লোকেদের আড্ডাস্থল;
(উৎসকাহিনী- কোলকাতা নিবাসী হরি ঘোষ নিস্কর্মা আত্মীয়দের প্রতিপালন করতেন; কোন নিস্কর্মা ব্যক্তি একবার তাঁর শরণ নিলেই তার আশ্রয় পেত; এইসব লোকের আবাসস্থল হওয়ায় তাঁর বাড়ির নাম হয়েছিল- 'হরি ঘোষের গোয়াল'; কথায় বলে- 'হরি ঘোষের গোয়াল পেয়েছে'; 'হরি ঘোষের গোয়াল বানিয়ে ফেলেছে'।)
27. হাঁটু জলে ডুবে মরা:
সামান্য বিপদে নাজেহাল হওয়া।
28. হরি মটর খেয়ে থাকা:
উপবাসে থাকা; যেদিন অন্নের কোন সংস্থান থাকে না সেই দিন লোকে বলে আজ হরিমটর খেয়ে থাকতে হবে।
29. হরিণের শত্রু তার মাংস:
মাংসের লোভে বাঘ হরিণ মারে; হরিণ নিজেই নিজের শত্রু;
30. হরেদরে কাশ্যপ গোত্র:
যার জাতি ও বংশ পরিচয় অজ্ঞাত; সমতুল্য- 'জাত খুইয়ে কাশ্যপ গোত্র'
31. হরিণের শিঙে মাছি বসে না:
সদা চঞ্চল হরিণের শিঙ-এ মাছি বসতে পারে না; গতিশীল মনে ময়লা ধরে না; সমতুল্য- 'গড়ানো পাথরে শ্যাওলা ধরে না'।
32. হরিহর আত্মা:
অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু; সমতুল্য- ‘জগাই-মাধাই’
33. হোদল বনে শিয়াল রাজা:
অজ্ঞানীদের মাঝে অল্পজ্ঞানী যথেষ্ঠ সম্মান পায়;
সমতুল্য- ‘ভেড়ার দলে বাছুর মোড়ল’।
34. হ্যাপায় পড়ে স্রোতে ভাসা:
দায়ে পড়ে কাজ করা।
35. হোঁচট খেয়ে পদ্মনাভ // হোঁচোট খেয়ে প্রণাম:
উল্টে পড়ে গিয়ে প্রণাম স্বীকার; প্রণাম না করেও প্রণাম; কার্যগতিতে কোন ভালো কাজ করা;
সমতূল্য- 'উচোট খেয়ে প্রণাম'।
36. হোঁতা (থোতা) মুখ ভোঁতা হ'লো:
দর্পচূর্ণ হ'লো।
37. হোক-না-কেন কাঠের বিড়াল ইঁদুর ধরতে পারলেই হ'ল:
উপায় যাই হোক-না-কেন কার্যসিদ্ধি হ'লেই হ'ল।
38. হেসে হেসে কথা কয় এ হাসি তো ভাল নয়:
কুটিল ব্যক্তি হেসে হেসে কথা বললে মনে সন্দেহ জাগে।
39. হিসাবের গরু বাঘে খায় না:
হিসাব করে চললে ভাল বই মন্দ হয় না।
40. হারামের পয়সায় আরাম নেই: অসদুপায়ে অর্জিত অর্থের কোন মূল্য নেই।
41. হায়রে আমড়া কেবল আঁটি আর চামড়া:
বাইরে চাকচিক্য ভেতরে শূন্যতা; দেখে আদর করে নিয়ে পরীক্ষায় অসারত্ব উপলব্ধি করা।
42. হাতের শাঁখা দর্পণে দেখা: ঘোরাপথে বা বাঁকাপথে কাজ করা।
to be contd...
the page is under prosess
No comments:
Post a Comment